বিস্মৃতি

বিস্মৃতি
----------
দুই একটা জোনাকি
বুকচিরে রক্ত ঝরায় রাস্তার ধুলোয়,
প্ল্যাটর্ফমের রড বেয়ে তখনও নির্বোধ অনুতাপ
চুঁইয়ে পড়ে..
আমার চিবুক দিয়ে সহস্র ঘাম
নেমে চলে নিজেদের লক্ষ্যের পথে।
নির্জীব স্ট্রিট লাইট পিছিয়ে পড়ে কুয়াশার ঘোরে,
ক্লান্ত শ্যাওলার দল ভেজে শিশিরের জলে....
আমি তোমার কান্নার শব্দ
স্পষ্ট শুনতে পাই....
তখনও ঝিঁঝিঁর ডাক শোনাচ্ছে ঘন ঝোপের দিকে,
অামি হেঁটে চলেছি বিষপথ ধরে,
নক্ষত্রলোকের উদ্দেশ্যে ।
আর পেছনে চলেছে নির্বাক প্ল্যাটর্ফমে ফেলে যাওয়া স্মৃতির দল। ....

আরিয়ান প্রিয়স

শেষ চিঠি

🍃শেষ চিঠি🍃

একদিন মেঘ উড়িয়ে নিয়ে এলো এক চিঠি৷
চিঠি প্রথমে সব নিয়ম করে লেখা
চিঠিটা আমাকে লেখা কোন এক উদ্ভিদের...
উদ্ভিদ " আমার এ চিঠি দেবার একমাত্র কারণ
যে জমি তুমি কিনেছো সে আমাদের
কয়েক পুরুষের বাসস্থান
সুখের সংসার আমাদের
তুমি এ জমি গ্রহণ করেছো
হয়ত অনেক দামে
হয়ত তুমি এখানে বানাবে কোন জনবহুল অট্টালিকা ৷
কিন্ত তার কারণে কত জীবের
মৃত্যু হবে !
তুমি কি জানো?
কত সুখের ঘরে শোক জন্মাবে
তুমি কি জানো!
আমি তোমার থেকে বয়সে বড়ো,
তবু তোমার কাছে হাত জোড়
করে আমার
পরিবারের প্রাণ ভিক্ষা চাইছি!
আমাদের বাঁচিয়ে,
আমাদের মধ্যে বাঁচো ৷
দেখবে এ পৃথিবী তোমার কাছে কত সুন্দর হয়ে উঠবে ।
তোমার সুখে প্রকৃতি হেসে উঠবে
তোমার প্রেমে প্রকৃতি ফুলের বৃষ্টি ছড়াবে ৷
তোমার অসুখে এ উদ্ভিজ্জ প্রান
তোমায় বাঁচিয়ে তুলবে ৷
তোমার কষ্টে প্রকৃতি কেঁদে উঠবে ৷
চোখের জলকে বুকে নিয়ে নদী মত বয়ে নিয়ে যাবে,
এক দেশ থেকে অন্য দেশে !!
তোমার সুখের সঙ্গী হবো আমরা
তোমার দুখে তোমায় বুকে জড়িয়ে নেবো ৷
দয়া করে তুমি আমাদের মৃত্যুর পথে
ঠেলে দিও না !
দয়া করো আমাদের!
তোমার মৃত্যুর পড় তুমি আবার প্রাণ পাবে,
নতুন সদস্য হবে উদ্ভিদের ৷
ইতি হতভাগা উদ্ভিদ"।

©আরিয়ান প্রিয়স

মিটমিটে(২০১৭)

❤মিটমিটে❤
***************
জেগে থাকা রাতে বেঁচে ওঠা অস্থি পিন্ড ;
দাপিয়ে বেড়ায় চোখের এদিক ওদিক ,
অবসাদে ঠোঁট ফুঁপিয়ে ওঠে অভিমানে৷
হিসেবের কথায় সুর ধরে না পুরানো রেয়াজে,
আঁতকে ওঠে দেহের ওমে আস্কারাগুলো,
রাতের অন্ধকারে বাঁধে তারাদের কারাগারে !
বাতাসের খস্ খস্ মুখ বুঝে সয় চাঁদ
অবাধ মেঘ উড়িয়ে আনে তোমার জলছবি৷
আবছা জ্যোৎস্না আলো পরে আমারও শরীরে
ছাঁই হয়ে যায় আমার হাতের পাঁচ আঙুল,
আহ্ আমি ছুঁতে পাচ্ছি না তোমায়, আমি মিশে যাচ্ছি ঘাসে ঢাকা উদ্ভিদে...
আমার শরীরের শিরা উপশিরা জুড়ে রক্ত জল হতে শুরু করেছে ৷
আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যুৎ প্রবাহ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৷
হঠাত চাঁদও দেখি বাষ্প হয়ে যাচ্ছে ,
বাষ্প হয়ে যাচ্ছে নক্ষত্র মন্ডলী !
আমি পুড়ে যাচ্ছি সেই বাতাসের অতীতে ৷৷

©আরিয়ান প্রিয়স

সহস্র বিরহ

সহস্র বিরহ💚

খামখেয়ালী রোদ্দুর আর রামধনু বৃষ্টির রং লুকিয়ে রাখে।

মাঝে মধ্যে বাতাস দিলে মেঘেরাও জ্বলে ওঠে।
রৌদ্র আলোয়,
অনেক পুরোনো অভ্যাস ।

সহজে বদলাতে পাড়ে না ।

এই হলো সেই প্রাসাদ, যার শীর্ষে স্বয়ং আকাশ বসেন।
এই হলো সেই নদী যার দুধারে  সহস্র বিরহ ডুবে মরে।

আজও তেমন ডুবছে দেখে বসলাম নদীর পারে ।

শৈশব ফেলে এসেছি অনেক অনেক দুরে
বাস্তবের প্রকাশে কবি ভাষায় দুএক কথাই চলে......

@আরিয়ান প্রিয়স

জলছবি🌷

জলছবি

জলের শব্দগুলো আমার রোজের চেনা।
এক অসম্ভব কল্কা একে যাচ্ছে
একের পর এক স্রোত।
আমি পাড়ে দাঁড়িয়ে
তার স্বাদটুকু উপলব্ধি করছি মাত্র।
জলের অজান্তেই....

এক বক শিকার করছে মাছ৷
লক্ষ্য তার জলের গভীরতায়।

ব্রীজ দাগ কাটছে জলের বুকে।
ফুটেছে ছায়ায়...

আমার দৃষ্টিপাত তাদের দিকে।

তুমিও আসতে পারো।
দেখবে এদেরও অদ্ভুত প্রাণ আছে।
বুকের ভেতর অদ্ভুত অনুভূতি হবে,
মুহূর্তের পরিবর্তনে৷
বাঁধবে মনকে তখন প্রকৃতির মায়ায়৷

তখন ঢেউ এর জল তোমার
পা ছোঁবে।
হয়ত বলবে"তুমি ভালো আছ তো?"
তোমার উত্তরটাই প্রাপ্তি তার।
তুমি উত্তর দিয়ে এসো কিন্তু৷
তোমার প্রিয়,ফেলে যাওয়া সৃষ্টিকে....

©আরিয়ান প্রিয়স

হারিয়ে ফেলেছি মূল্য

হারিয়ে ফেলেছি মূল্য

🌷আরিয়ান প্রিয়স🌷

পৃথিবীর এক একটি মেরু পথ ধরে ঘুরেছি আমি,
বুঝেছি ভালোবাসা নাকি ক্ষুধার চেয়ে দামি।
বারে বারে দেখেছি তোমার রক্ত ঝরা মুখ,
স্পষ্ট দেখি ক্রোধ, হিংসায় চোখ উন্মুখ ...

পাহাড়ের সাথে তুলনা করেছি আমার,
তুমি তেজস্বিনী রুদ্র মুখী নদী...
রক্তে ভেজাও আমার কঠিন হৃদয়,
মুছে দাও যত মোহময় সংশয়...
স্তব্ধ হোক কান্না তোমার পায়ের তলায়,
অশরীরী হেসে উঠুক রক্ত মাখা গলায়...

তখন বলেছি তুমি ক্রুদ্ধ আগ্নেয়গিরি,
আমি তখন অসহায় দূর্বার সারি...
জ্বলছি তোমার তেজ বিরহে গর্জনে,
"হারিয়ে ফেলেছি মূল্য"-শরীর অশরীরী বন্ধনে....

লিপস্টিকের দাগ

লিপস্টিকের দাগ

🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
স্বাদের গভীরতা চেনায় তোমার লিপস্টিকের দাগ।
আর সক্রিয় হরমোনে বিস্তর চাঞ্চলতা সৃষ্টি করে।
ভাইরাস ছড়িয়ে পরে শরীরে বিভিন্ন শিরা-উপশিরা হৃদ স্পন্দনে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে....
সামান্য ছোঁয়ায় মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটতে পাড়ে,
টেনে ফেলে দেয় অতীত-ভবিষ্যত সহস্র বিষাদ-বিভেদ চিন্তা ।
বার বার লিপস্টিকের দাগে সেজে উঠতে চায় মন।
রাস্তা বাঁক অজানা হলেও হিসেবি হয়ে ওঠে শরীরের তৃষ্ণার্ত যন্ত্রণা ক্ষত..
শেষ মরণ যাত্রাও পিছুটান রেখে যায় ওই লিপস্টিকের দাগ....
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷

আরিয়ান প্রিয়স

নরক

বহুকাল থেমেছে অগ্ন্যুৎপাত
ধ্বংস হওয়া প্রাচীনের শহর ৷

নদীর বুকে তাতছে পোড়া  মালসা৷

এতদিন যে পথে চলেছি
সে পথে চেরা শরীরের গর্ত

যা ফিরিয়ে আনে অতীতে দুর্ভিক্ষ৷
সাবধানে চলো৷পথ জুড়ে হিংস্র খুলি,
দিচ্ছে বেচে দেওয়া শর্ত ৷ প্রলোভন অনুভূতি ৷

শয়তান দেব নামিয়ে গেছেন ঘড়া

এই তো সেদিন তুমি মারলে আমায়,
সে সব ভুলে আমরা আজ বন্ধু ৷

এক জোনাকি আলোর সন্ধে তোমায় দিলাম৷

কোন বিকেল ফুল সাজিয়ে দিলাম খোঁপায়,
চোখের কোনে চাপা লাল রক্ত বিন্দু ৷

মাংসপিণ্ড আগলে ডোমের বংশ জাতোই
ছাই ভেসে গেছে বৃষ্টির জলে৷ এখন কি উপায়!

একটা নরক৷দুজনের জায়গা হবে না থাকার ??

©অারিয়ান প্রিয়স

অনুরাগ

কতটাই বা জমলো ব্যথা- ফিতে দিয়ে করছো মাপ,
হৃদয় ক্ষতে রক্ত ক্ষরণ কপাল গোণে নিম্মচাপ ।

খুব ভোরে সে মাখলো আদোর, চাদর দিয়ে ঢাকছো তাই,
মেঘ পাঠালো খেতাব তোমায়,প্রশ্ন করে জবাব চাই

হঠাৎ তোমার চুল ভিজেছে, ঝড়কি তবে আসতে চায়
জিদ্দি তবে সাঁঝের আলোই, ঝুকিয়ে মাথা ফুল কুড়ায়

তারার দলে শোক নেমেছে বৃষ্টি হতে কি বা দোষ,
জ্যোৎস্না আলো মাখলে কাদা মাটির মনে অসন্তোষ ।

জল জমেছে ঠোঁটের কোনায় লিপস্টিকে কি ভরবে মন
স্মৃতির ক্ষতে একলা শুয়ে বৃষ্টি এলে ভিজবো'খন....

আরিয়ান প্রিয়স

অনবদ্য কিছু ক্লিক

মন মেলেছি মাত্রা বুঝে

ঝলমলানো এই শহরে অন্ধ বাতাস খুঁজবে যে
অভিমানে চাদর ছুঁড়ে,সময় কেবল দাম খোঁজে।

বিরহ গুলো অনেক দুরে,
অাসছে শুধু স্বপ্ন ঘোরে।

নিকোটিনে লুকিয়ে জখম,মন মেলেছি মাত্রা বুঝে।

বেনামী

তীরের বালুচরে মেঘ
এসে জমে,
আমি জলের বুকে পা ফেলে
হেঁটে চলি,
ঝিনুকের খোঁজে ৷
জাতহীন জলোচ্ছ্বাস পা ছুঁয়ে যায় -
আমি অনুভব করি তোমার উপস্থিতি৷
তুমি কোন জাতি?
কী তোমারই বা রঙ!
তোমার অন্ধ যন্ত্রণাগুলো আমার শরীরে দানা বাঁধে৷
অনেক অবুঝ খেয়াল আমায় জড়িয়ে ধরে৷
আমি ছদ্মনামে হন্যে হয়ে খুঁজি অজানা রাস্তার মোড় ৷
কুড়িয়ে খাই যন্ত্রণার বিরহ আবেগ ।
তৃপ্তি পেলে মিশে যাই মাটির সাথে,
বন্ধু পাতাই মায়াবী রাতে৷
অবশেষ তারা গুনে ঘুমিয়ে পড়ি বেনামী ধুলোদের বুকে!
ফিরে চলি নতুন ভোরের আশায়, কল্পনার পথ ধরে৷

                                -বেনামী-
                         আরিয়ান প্রিয়স